আল্লাহর আইন শাশ্বত ও চিরন্তন
কয়েকদিন পূর্বে ভি এইচ পির নেতা গ্রীরাজ কিশোর অত্যন্ত জঘন্য, দায়িত্বহীন ও উস্কানিমূলক একটা বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যে বলেন, কুরআন—হাদিসের বিষয়বস্তুতে পরিবর্তন আনা উচিত। তার দাবি হলো—যেসব আয়াত ও হাদিসে অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা শিক্ষা দেয়া হয়েছে সেগুলো অপসরণ করা উচিত। তার এই উস্কানিমূলক বক্তব্য যেমন অযৌক্তিক তেমনি জঘন্য। জঘন্য এজন্য যে, এতে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে এবং তাদের ধর্মগ্রন্থকে নির্লজ্জভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। অযৌক্তিক এজন্য যে, যে—কোনো বক্তব্য বা লেখা পরিবর্তনের অধিকার রাখেন একমাত্র বক্তা বা লেখক; অন্য কেউ নয়। এটা হতে পারে না যে, কেউ কোনো কথা বলে দিলো বা লিখে দিলো আর অন্য কেউ সেটা পরিবর্তন দিলো। তাছাড়া মুসলমানগণ কুরআনকে আল্লাহর কালাম এবং হাদীসকে কুরআনের ব্যাখ্যা—বিশ্লেষণ মনে করেন। তাদের জন্য কুরআন—হাদিসে পরিবর্তনের অবকাশ কোথায়?
(আল্লাহর আইন শাশ্বত ও চিরন্তন)
নিছক বুদ্ধিগত দিক থেকেও তার দাবি অযৌক্তিক। তবে এ ধরনের অযৌক্তিক ও অবিবেচক দাবি মুসলমানদের কাছে নতুন কিছু নয়। কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার যুগেও মক্কার মুশরিকরা এ ধরনের দাবি করেছিল। তখন রাসুলের জবানে এ জবাব প্রতিধ্বনিত হয়েছে—আমার কী সাধ্য কুরআন পরিবর্তন করার বা নিজের থেকে কিছু সংযুক্ত করার! আল্লাহ পাক বলেন,
وَ اِذَا تُتْلٰی عَلَیْهِمْ اٰیَاتُنَا بَیِّنٰتٍ ۙ قَالَ الَّذِیْنَ لَا یَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا ائْتِ بِقُرْاٰنٍ غَیْرِ هٰذَاۤ اَوْ بَدِّلْهُ ؕ قُلْ مَا یَكُوْنُ لِیْۤ اَنْ اُبَدِّلَهٗ مِنْ تِلْقَآیِٔ نَفْسِیْ ۚ اِنْ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوْحٰۤی اِلَیَّ ۚ اِنِّیْۤ اَخَافُ اِنْ عَصَیْتُ رَبِّیْ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍ
‘যখন আমার আয়াত, যা সুস্পষ্ট, তাদের নিকট পাঠ করা হয় তখন যারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না তারা বলে ‘অন্য এক কুরআন আন এটা ছাড়া, অথবা এটা বদলে দাও।’ বলো, ‘নিজ থেকে এটা বদলানো আমার কাজ নয়। আমার প্রতি যা অহী হয়, আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্যতা করলে অবশ্যই আমি মহাদিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি।’ [ইউনুস : ১৫]
দেখুন, ভি এইচ পিরা যে দাবি করছে সেটা মক্কার মুশরিকদের দাবির সঙ্গে কতোটা সাদৃশ্যপূর্ণ! যুগ ভিন্ন, কিন্তু দাবি—দাওয়া অভিন্ন; ঢঙ্গ ও উপস্থাপনা অভিন্ন। ভাষা ভিন্ন, কিন্তু চিন্তাচেতনা অভিন্ন; মস্তিষ্কের নৈরাজ্য অভিন্ন। এটাই আল্লাহ পাক এভাবে বলেছেন,
کَذٰلِکَ قَالَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ مِّثْلَ قَوْلِهِمْ ؕ تَشَابَهَتْ قُلُوْبُهُمْ ؕ
‘এইভাবে তাদের পূর্ববর্তীরাও তাদের অনুরূপ কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম।’ [বাকারা : ১১৮]
বলা বাহুল্য, আজো মুসলিম উম্মাহ সে জবাব দেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা দিয়েছেন। এটা আমাদের রচিত গ্রন্থ নয় বা আমাদের চিন্তার ফসল নয়। এটা বরং আল্লাহ পাকের শাশ্বত গ্রন্থ। এতো কারো পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আমরা যদি তাতে বিন্দুবিসর্গ পরিবর্তন করি তাহলে আখেরাতের শাস্তি থেকে আমাদের কে বাঁচাবে?
এটা শুধু মক্কার মুশরিকদের একার দাবি নয়; বরং প্রত্যেক যুগের বিভ্রান্ত, খোদাদ্রোহী ও নির্বোধ লোকেরা এমন অযৌক্তিক ও অশোভন দাবি করেছে। এ ব্যাপারে আল্লাহ পাক বনি ইসরাঈলের ঘটনা উল্লেখ করেছেন। হযরত মুসা আ. যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত নিয়ে এলেন, ইহুদিরা তা মানতে অস্বীকার করলো। তারা দাবি করলো, এটা আরো সহজ করা হোক! এতে যে কঠিন বিধি—বিধান আছে সেগুলো পরিবর্তন করা হোক! এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ তাদের ইতিহাসজুড়ে আছে—আল্লাহর অবাধ্যতা, নবী—রাসূলদের সঙ্গে ঠাট্টা—বিদ্রƒপ ও জুলুম—নির্যাতন। তাদের অবাধ্যতা দেখে আল্লাহ পাক তাদের ওপর তুর পাহাড় তুলে ধরেন এবং বলেন—আমি যে বিধি—বিধান দিয়েছি সেগুলো মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং স্মরণ রাখো; অন্যথায় তোমাদেরকে পাহাড়ের নীচে পিষে ফেলবো। তখন গিয়ে তারা মাথা নত করে এবং আল্লাহর বিধি—বিধান গ্রহণ করে। আল্লাহ পাব বলেন,
وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّوْرَ ؕ خُذُوْامَاۤ اٰتَیْنٰكُمْ بِقُوَّۃٍ وَّاذْكُرُوْا مَا فِیْهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ
‘এবং তুরকে তোমাদের ঊর্ধ্বে তুলে ধরলাম; বললাম, ‘আমি যা দিলাম দৃঢ়তার সঙ্গে গ্রহণ করো এবং তাতে যা আছে তা স্মরণ রাখো, যাতে তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পারো।’ [বাকারা : ৬৩]
মানুষ যেমন মরণশীল তার চিন্তাচেতনাও অস্থিতিশীল; সর্বদা তা পরিবর্তিত হতে থাকে। আর আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রতিটি অণু—পরমাণু সম্পর্কে জানেন। তিনিই সৃষ্টিজগতের খালেক মালেক। তাঁর কাছে অতীত—বর্তমান—ভবিষ্যত বলে কিছু নেই। সবই তাঁর কাছে সমান। তাঁর কোনো নির্দেশ ন্যায়পরিপন্থী বা বাস্তবতাবিরোধী হতে পারে না। আবার তাঁর কোনো আইন মধ্যপন্থা ও ভারসাম্যবিবর্জিত হতে পারে না। সুতরাং তাতে পরিবর্তনের কথা চিন্তা করা চরম নিবুর্দ্ধিতা। পবিত্র কুরআনে বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে¬—
وَتَمَّتْ کَلِمَتُ رَبِّکَ صِدْقًا وَّ عَدْلًا ؕ لَا مُبَدِّلَ لِکَلِمٰتِهٖ ۚ وَ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ ﴿۱۱۵﴾ وَ اِنْ تُطِعْ اَكْثَرَ مَنْ فِی الْاَرْضِ یُضِلُّوْکَ عَنْ سَبِیْلِ اللهِ ؕ اِنْ یَّتَّبِعُوْنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنْ هُمْ اِلَّا یَخْرُصُوْنَ
‘সত্য ও ন্যায়ের দিক দিয়ে তোমার প্রতিপালকের বাণী পরিপূর্ণ। তাঁর বাক্য পরিবর্তন করার কেউ নেই। আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামতো চল তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে; আর তারা শুধু অনুমানভিত্তিক কথা বলে।’ [আনয়াম : ১১৫—১১৬]
(আল্লাহর আইন শাশ্বত ও চিরন্তন)
আল্লাহ পাক রাসুলের জবানে বলিয়েছেন—আমি কি আল্লাহকে ছাড়া আর কোনো হাকেম তালাশ করবো? অথচ তিনি তোমাদের কাছে বিশদ কিতাব নাযিল করেছেন। এটা তাদের এমন নাপাক দাবি যা কেয়ামত পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে না—
اَفَغَیْرَ اللهِ اَبْتَغِیْ حَکَمًا وَّ هُوَ الَّذِیْۤ اَنْزَلَ اِلَیْكُمُ الْکِتٰبَ مُفَصَّلًا ؕ
‘বল, ‘তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সালিশ মানবো—যদিও তিনিই তোমাদের প্রতি সুস্পষ্ট কিতাব নাযিল করেছেন।’ [আনয়াম : ১১৪]
‘কুরআন—হাদিসে ঘৃণা—বিদ্বেষ শেখানো হয়’ এটা নির্জলা মিথ্যা অপরাধ। পবিত্র কুরআন মানুষ ও মানবতার প্রতি বিদ্বেষ নয়, বরং ভালোবাসা শেখায়। কুরআন নিষেধ করে, মানুষের কোনো শ্রেণি যেনো অপর শ্রেণিকে হীন দৃষ্টিতে না দেখে। কুরআন বলে, হযরত আদম আ. মানবজাতির পিতা। আদম হাওয়া থেকেই পুরো মানবজাতির সৃষ্টি। এই মানবসাম্যের মতবাদ একদিকে যেমন সাম্য ও সমতা শিক্ষা দেয় অন্যদিকে একই পরিবারভুক্ত হওয়ার কারণে পরস্পরের প্রতি মহব্বত—ভালোবাসাও শিক্ষা দেয়। পবিত্র কুরআন মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে যে—কোনো মানুষ হত্যাকে পুরো মানবজাতিরহত্যার নামান্তর ঘোষণা করেছে—
مَنْ قَتَلَ نَفْسًۢا بِغَیْرِ نَفْسٍ اَوْ فَسَادٍ فِی الْاَرْضِ فَکَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیْعًا ؕ
‘নরহত্যা অথবা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করা ব্যতীত কেউ কাউকেও হত্যা করলে সে যেনো দুনিয়ার সকল মানুষকেই হত্যা করলো।’ [মায়েদা : ৩২]
যদি ইসলাম অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা—বিদ্বেষ শিক্ষা দিতো তাহলে মুসলমানগণ অন্য ধর্মের লোকদের ইসলামগ্রহণে বাধ্য করতো। অথচ কুরআন স্পষ্ট ঘোষণা করছে, ধর্মীয় ব্যাপারে কোনো বাধ্য—বাধকতা নেই—
لَاۤ اِكْرَاهَ فِی الدِّیْنِ ۟ۙ قَدْ تَّبَیَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَیِّ ۚ
‘দীন গ্রহণে কোনো জোর—জবরদস্তি নেই; সত্য পথ ভ্রান্ত পথ থেকে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে।’ [বাকারা : ২৫৬]
ইসলাম শান্তি, নিরাপত্তা ও সন্ধিমৈত্রীর ধর্ম। কুরআন—হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। আল্লাহ পাক বলেন,
وَ اِنْ جَنَحُوْا لِلسَّلْمِ فَاجْنَحْ لَهَا وَ تَوَکَّلْ عَلَی اللهِ ؕ اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ
‘তারা যদি সন্ধির দিকে ঝুঁকে তবে তুমিও সন্ধির দিকে ঝুঁকবে এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করবে; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ [আনফাল : ৬১]
যেসকল অমুসলিম তোমাদের সঙ্গে সন্ধি ও মৈত্রীর সম্পর্ক গড়তে চায় তোমরাও তাদের সঙ্গে সন্ধির পথ অবলম্বন করো।
পবিত্র কুরআনে মুসলমানদের ওপর আক্রমণোদ্যত কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে ওই সকল লোকদের সঙ্গে নয় যাদের সঙ্গে মুসলমানদের শান্তিচুক্তি আছে। আল্লাহ পাক বলেন—
اِلَّا الَّذِیْنَ یَصِلُوْنَ اِلٰی قَوْمٍۭ بَیْنَكُمْ وَبَیْنَهُمْ مِّیْثَاقٌ اَوْ جَآءُوْكُمْ حَصِرَتْ صُدُوْرُهُمْ اَنْ یُّقَاتِلُوْكُمْ اَوْ یُقَاتِلُوْا قَوْمَهُمْ ؕ وَلَوْ شَآءَ اللهُ لَسَلَّطَهُمْ عَلَیْكُمْ فَلَقٰتَلُوْكُمْ ۚ فَاِنِ اعْتَزَلُوْكُمْ فَلَمْ یُقَاتِلُوْكُمْ وَاَلْقَوْا اِلَیْكُمُ السَّلَمَ ۙ فَمَا جَعَلَ اللهُ لَكُمْ عَلَیْهِمْ سَبِیْلًا
‘কিন্তু তাদেরকে নয় যারা এমন এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলিত হয় যাদের সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ, অথবা যারা তোমাদের নিকট এমন অবস্থায় আসে যখন তাদের মন তোমাদের সঙ্গে অথবা তাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সংকুচিত হয়। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন তবে তাদেরকে তোমাদের ওপর ক্ষমতা দিতেন এবং তারা নিশ্চয় তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতো। সুতরাং তারা যদি তোমাদের নিকট থেকে সরে দাঁড়ায়, তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না করে এবং তোমাদের নিকট শান্তি প্রস্তাব করে তবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা অবলম্বনের পথ রাখেন নি।’ [নিসা : ৯০]
কতো সুস্পষ্ট নির্দেশ! যারা মুসলমানদের ওপর আক্রমণোদ্যত নয়; তাদের অধিকার হরণ করে না, তাদের ওপর জুলুম—নির্যাতন করে না, তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের অনুমতি নেই; তেমনি তাদের প্রতি হিংসা—বিদ্বেষও সৃষ্টি করা যাবে না। তবে হ্যা, যারা মুসলমানদের জানমাল ও ইজ্জত—আব্রুর ওপর আক্রমণ করে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিংসা—বিদ্বেষ ছড়ায়, তাদের সঙ্গে নিঃসন্দেহে জিহাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এটা শুধু ইসলামের নির্দেশ নয়, বরং পৃথিবীর প্রতিটি সভ্য ধর্মের নির্দেশ। সব ধর্মই নিজেদের নিরাপত্তা এবং জুলুম প্রতিরোধের অধিকার স্বীকার করে।
গ্রীরাজ কিশোর শুধু ইসলাম ধর্মের নয়, বরং হিন্দুধর্মেরও অবমাননা করেছেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন, তিনি হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থ পরিবর্তন করতে প্রস্তুত। প্রথম কথা হলো, কিশোর সাহেব তো কোনো ধর্মগুরু নন যে তিনি ধর্মগ্রন্থ পরিবর্তন করতে পারেন। সুতরাং তাঁর উচিত অন্য ধর্মের ব্যাপারে নাক না গলানো। আবার নিজ ধর্মের ব্যাপারেও মত প্রকাশের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা।
ধর্মের ব্যাপারটি খুবই স্পর্শকাতর। তাতে মানুষের আকীদা—বিশ্বাস ও আবেগ—অনুভূত জড়িত। এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, যা ইচ্ছা বলে দিলাম; মুখে যা এলো ছুঁড়ে দিলাম। স্বয়ং হিন্দুধর্মের ক্ষেত্রেও তার বক্তব্য অত্যন্ত অপমানজনক। কারণ রাজনীতির লোক হয়ে তিনি নিজেকে হিন্দুধর্মের মহান সংস্কারক মনে করেন। হায়, হিন্দু ধর্মগুরুরা যদি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতেন!
মুসলমানদের উচিত এমন অশোভন, দায়িত্বহীন ও উস্কানিমূলক বক্তব্যে উত্তেজিত না হওয়া। এধরনের অর্থহীন কথাবার্তা তারাই বলে যারা চিন্তানৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনে পরাজিত। তারা চায় প্রতিপক্ষকে উত্তেজিত করে বাস্তবতা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে দিতে। আমরা যদি তাদের কথায় উত্তেজিত হই তাহলে তাদের নাপাক উদ্দেশ্যই শুধু বাস্তবায়িত হবে।
সুতরাং আমাদের উচিত পূর্ণ বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে অগ্রসর হওয়া এবং চিন্তানৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভাষায় এ ধরনের অর্থহীন কথার জবাব দেয়া। তাদের কাছে স্পষ্ট করে দেয়া যে, আমরা নিজ ধর্মের ব্যাপারে যেমন এমন কথা সহ্য করি না, আবার অন্য ধর্মের ব্যাপারেও এমন দাবি করি না। আমরা সকল ধর্মের মূল্যায়নে এবং পরস্পর সৌহার্দ—সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি।
মহানবী জগতের আদর্শ মহামানব। ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ