ঈমান

ঈমান । রাহে সুন্নাত ব্লগ। আবু তাসনীম উমাইর

ইবাদত ইসলাম প্রতিদিন নসীহত প্রবন্ধ

ঈমান

ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ বিশ্বাস করা, স্বীকার করা, ভরসা করা ও নিরাপত্তা প্রদান করা ইত্যাদি। ধাতুগত অর্থে ঈমান হলো ধমীর্য় আকীদা বা বিশ্বাস, আর ইসলাম ধমীর্য় আমল ও কাজকর্মকে বুঝায়। ঈমানের বিশেষণে ‘মুমিন’ এবং ইসলামের বিশেষণে ‘মুসলিম’ বা মুসলমান ব্যবহৃত হয়। কিন্তু প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটির জায়গায় আরেকটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমনÑ ঈমান যদি দালানের ফাউন্ডেশন বা গাছের শিকড় হয়, তাহলে ইসলাম হলো দালানের দেয়াল বা গাছের ডালপালার মতো। দালানের ভিত্তি ছাড়া যেমন দেয়ালের অস্তিত্ব থাকে না তেমনি গাছের মূল শিকড় ছাড়া ডাল—পালার কোনো অস্তিত্ব সম্ভব নয়। অপরদিকে দেয়াল না থাকলে শুধু ভিত্তির এবং ডালা পালা না থাকলে শুধু শিকড়ের তেমন কোনো মূল্য থাকে না। তাই ধমীর্য় ঈমান—আকীদা সহীহ না থাকলে শুধু বাহ্যিক ইসলামেরও কোনো মূল্য থাকে না।

শরীয়তের পরিভাষায় ঈমান বলা হয়, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নিয়ে আসা সেসব বিষয়, যা স্পষ্টভাবে ও অবধারিতরূপে প্রমাণিত। সেসব বিষয় মনে প্রাণে মেনে নেয়া। দিলে দিলে বিশ্বাস স্থাপন করার পর মুখে তা স্বীকার করা এবং কুরআন—সুন্নাহ ও ইজমায়ে উম্মত অনুসারে আমল করা। সংক্ষেপে ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাসসমূহকেও ঈমান বলা হয়।

ঈমানের মর্ম হলো, আল্লাহ তা‘আলার ওহীসমূহের উপর পুরোপুরি ইয়াকীন ও আস্থা রাখা। অর্থাৎ, অন্তরের গভীরে নির্দ্বিধায় এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই অনন্ত অসীম ক্ষমতার অধিকারী। তিনি দুনিয়ার যে কোনো জিনিসের মধ্যে নিজ ইচ্ছায় যে কোনো গুণ, বৈশিষ্ট্য ও ক্রিয়া দিয়ে রাখতে পারেন। আবার যে কোনো সময় তা রহিত করতে পারেন। আমল ও ইবাদতসমূহের কোনটির মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা কী বৈশিষ্ট্য রেখেছেন, তা রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে ওহীর মাধ্যমে উম্মতকে জানিয়ে দিয়েছেন।
ঈমানের দাবি হলো, নিজেকে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সমর্পণ করা আর এই ওয়াদাবদ্ধ হওয়া যে, এখন থেকে আর আমার নিজের কোনো ইচ্ছা চলবে না। এখন থেকে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার অনুগত হয়ে জীবনযাপন করবো। কিভাবে জীবনযাপন করতে হবে, ইবাদত বন্দেগী করতে হবে, মানুষের সঙ্গে আচার—ব্যবহার ও লেনদেন কিভাবে চলবে, আখলাক—চরিত্র কেমন হবে ইত্যাদি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র সম্পর্কে রয়েছে হেদায়াত ও দিক—নির্দেশনা এবং তা সবই এ কালেমার আওতাভুক্ত। সেসব দিক—নির্দেশনা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বাণী দ্বারা দিয়ে গেছেন তেমনি নিজ জীবনের প্রতিটি কাজকর্মের দ্বারা তিনি তাঁর বাস্তব প্রশিক্ষণও দিয়ে গেছেন। পূর্ণাঙ্গ দ্বীনকে তিনি তাঁর পবিত্র জীবনের মধ্য দিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন।

প্রতিবেশীর হক । মাওলানা আবু তাসনীম উমাইর

কাজী মুজাহিদুল ইসলাম কাসেমী রহ ছিলেন ভারতবর্ষের মুসলিম মিল্লাতের অতন্দ্র প্রহরী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *