জাহান্নামের বিবরণ পর্ব ৪
৩১. হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, কিছু সংখ্যক লোক তাদের গুনাহর কারণে তার শাস্তি স্বরূপ জাহান্নামের আগুনে ঝলসিত হবে। অতঃপর আল্লাহ তার রহমত ও করুণায় তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তবে সেখানে তাদেরকে জাহান্নামী বলে ডাকা হবে। -বুখারী
৩২. হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রাযি. থেকে বর্ণিত, একদল লোককে রাসূল (সা.) এর সুপারিশে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। অতঃপর তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের নাম রাখা হবে জাহান্নামী। -বুখারী
৩৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবেন মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, জাহান্নাম থেকে সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত এবং সর্বশেষ জান্নাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলবেন, জান্নাতে প্রবেশ কর, তোমাকে জান্নাতে দুনিয়ার সমপরিমাণ এবং তার দশগুন জায়গা দেয়া হলো- এ ব্যক্তি হবে মর্যাদার দিক দিয়ে জান্নাতীদের সর্বনিম্ন স্তরের। -বুখারী ও মুসলিম
৩৪. হযরত আবু যর রাযি. থেকে বর্ণিত, সর্বশেষ জাহান্নামী যে সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী হবে তাকে বলা হবে, তোমার প্রতিটি গুনাহের স্থলে তোমাকে এক একটি করে নেকী দেয় হলো। তখন সে বলবে, হে রব! আমিতো এমন কিছু বড় বড় রগানাহও করেছিলাম, যে গুলো এখানে দেখতে পাচ্ছিনা। এ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এমনভাবে হাসতে দেখলাম যে, তাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। -মুসলিম
৩৫. হযরত আনাস [রাযি. থেকে বর্ণিত, চার ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে বের করে আবার জাহান্নামে প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হবে। তখন তাদের একজন পিছন ফিরে বলবে, হে রব! আমি তো এ আশায় ছিলাম যে, যখন তুমি একবার আমাকে জাহান্নাম থেকে বের করে এনেছ, তখন সেখানে আর ফেরৎ পাঠাবে না। তখন আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে নাজাত দিয়ে দিবেন। -মুসলিম
৩৬. হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, কোন জাহান্নামীকে জাহান্নামে প্রবেশ কররানো হবে না, যে পর্যন্ত ভাল কাজ করলে তার জান্নাতে যে স্থান হতো তা সে না দেখবে। যেন তার অনুসোচনা ও আফসোস বৃদ্ধি পায়। -বুখারী
৩৭. হযরত আনাস [রাযি. থেকে বর্ণিত, সারিবদ্ধভাবে দ-ায়মান জাহান্নামীদের মধ্য থেকে- এক জাহান্নামী ব্যক্তি এক জান্নাতী ব্যক্তিকে দেখে বলবে, হে অমুক! আমি সেই এক ব্যক্তি, যে তোমাকে পানি পান করিয়ে ছিলাম। আর একজন বলবে, আমি সে এক ব্যক্তি যে একদিন তোমাকে ওজুর জন্য পানি দিয়ে ছিলাম। তখন জান্নাতী ব্যক্তি তার জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। -ইবনে মাযাহ
৩৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ [রাযি. থেকে বর্ণিত, সকল মানুষ (পুলসিরাত অতিক্রম করার সময়) জাহান্নামে উপস্থিত হবে এবং আমলের অনুপাতে নাযাত পাবে। -তিরমিযী
৩৯. হযরত সালাম বিন আমর রাযি. থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি এমন কথা আমার উপর আরোপ করে যা আমি বলিনি, সে যেন তার স্থান জাহান্নামে করে নেয়। -বুখারী
৪০. হযরত বারা বিন আযেব রাযি. থেকে বর্ণিত, কাফেরের মৃত্যুর পর কবরে তার রুহ ফিরিয়ে দেয়া হয়। দুইজন ফেরেস্তা তাকে উঠিয়ে জিজ্ঞেস করবেন, তোমার রব কে? সে উত্তর দেয়, হায় হায়! আমি জানি না। তারা জিজ্ঞেস করবেন, কে এই ব্যক্তি যিনি তোমাদের মাঝে প্রেরিত হয়েছিলেন? সে উত্তর দেয়, হায় হায়! আমি জানি না। তখন আকাশ থেকে একজন ঘোষণাকারী- ঘোষণা দেয়, সে মিথ্যা বলেছে। তার জন্য জাহান্নামের একটি বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জাহান্নামের পোশাক পড়িয়ে দাও এবং তার জন্য জাহান্নামের একটি দরজা খোলে দাও। রাসূল (সা.) বলেন, ফলে তার দিকে জাহান্নামের ভীষণ তাপ উত্তপ্ত বায়ূ আসতে থাকে। -আহমদ, আবু দাউদ
জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য শিরকমুক্ত ঈমান ও বিদয়াতমুক্ত আমল অর্থাৎ রাসূল (সা.) এর দেখানো পদ্ধতিতে আমল প্রয়োজন। জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য মাগিরব ও ফজর এই দুই ওয়াক্তে সাতবার করে নিম্নের দোয়াটি পড়ার জন্য শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
(আল্লাহুম্মা আজরিনী মিনান্নার- হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও) -আহমদ ও আবু দাউদ
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন: রাব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাওঁ ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়াক্বিনা আযাবান নার। -সূরা বাকারা: ২০১
সুন্নাহসম্মত পন্থায় সুন্নাহ এর প্রতি আহবান
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন