দুরূদ শরীফ শ্রেষ্ঠ দুআ

দুরূদ শ্রেষ্ঠ দুআ

ইসলাম প্রতিদিন নসীহত

দুরূদ শ্রেষ্ঠ দুআ

দুরূদ শরীফ পাঠ করা যেমন একটি ইবাদত সেই সাথে এটি অত্যন্ত উঁচু ও শ্রেষ্ঠ পর্যায়ের একটি দু‘আও। উলামায়ে কেরাম লিখেছেন, পৃথিবীতে এমন কোন দু‘আ নেই যা কবুল হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেয়া যায়, কিন্তু দুরূদ শরীফ এমন একটি দু‘আ যা কবুল হওয়াটা শতভাগ নিশ্চিত। এ কারণে যে কোন দু‘আর শুরু ও শেষে দুরূদ পাঠের নির্দেশ রয়েছে। অনুরূপ নামাযের শেষ বৈঠকে দুরূদ পাঠের বিধান রয়েছে। যেন দুরূদের বরকতে আল্লাহর দরবারে এআমলগুলো গ্রহণীয়তা নিশ্চিত হয়। অতএব বান্দা দু‘আ করে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে যেসব রহমত, বরকত ও কল্যাণ হাসিল করতে পারে তদ্রƒপ দুরূদের দ্বারাও সেগুলো অর্জন করতে পারে। বরং আগত (উবাই ইবনে কা‘ব এর ঘটনা) একটি হাদীস দ্বারা জানা যাবে যে, যদি কোন ব্যক্তি অধিক পরিমাণে দুরূদ পাঠের কারণে আল্লাহর দরবারে নিজের বা অন্যের জন্য দু‘আ করার কোন সময়ই না পায়। তবুও আল্লাহ তাকে বিনা প্রার্থনায় তার সকল প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণ করে দিবেন এবং গুনাহের মন্দ প্রভাব থেকে তাকে সম্পূর্ণ পাক-পবিত্র করে দিবে।

দুরূদ শরীফের অনন্য কতিপয় বৈশিষ্ট্য

দুরূদের আমলে আল্লাহ নিজেও শামিল

কুরআন কারীমে আল্লাহ তা‘আলা অসংখ্য বিধি-বিধান বর্ণনা করেছেন কিন্তু দুরূদের নির্দেশ ও সম্বোধনের ভঙ্গি অন্যান্য বিধান থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। দুরূদের বেলায় আল্লাহ তা‘আলা যে সোহাগ মিশ্রিত মর্মস্পর্শী ভাষা অবলম্বন করেছেন তা অন্য কোন উচ্চ থেকে উচ্চতর আমলের জন্যও করেননি। নামায, রোযা ও হজ্জের বেলায় কোন প্রকার ভূমিকা ছাড়াই সরাসরি নির্দেশ করেছেন। পক্ষান্তরে দুরূদের ব্যাপারে বলেছেন, এ আমলটি আমার ও আমার ফেরেশতাদের চির অনন্তকালের অযীফা এবং অভ্যাস ও রীতি। অতএব হে ঈমানদারগণ! তোমরাও স্বতঃস্ফুর্তভাবে তাতে অংশগ্রহণ কর। আর যে আমলে স্বয়ং আল্লাহ শামিল থাকেন তার মর্যাদা ও গুরুত্ব যে কত বেশি তাতো বলাই বাহুল্য।

স্মর্তব্য : স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে তফাৎ যতটুকু আল্লাহ তার মাখলুকের মাঝে দুরূদ প্রেরণের পার্থক্য ঠিক ততটুকু। বিখ্যাত তাবেয়ী সুফিয়ান সাওরী (রহ.) বলেন, আল্লাহ তা‘আলার নবীজীর প্রতি দুরূদ প্রেরণের তাৎপর্য হলো তার প্রতি অবিরাম ও অবিরত রহমতের ধারা বর্ষণ করতে থাকেন- যা কখনই নিঃশেষ হবার নয়। ইমাম আবুল আলিয়া বলেন, আল্লাহর দুরূদ প্রেরণের তাৎপর্য হলো আল্লাহ তা‘আলা তার উচ্চতর ফেরেশতাদের মজলিসে নবীজীর প্রশংসা করেন এবং তাকে মর্যাদার শীর্ষে পৌঁছাতে চান।

পক্ষান্তরে ফেরেশতাদের দুরূদ প্রেরণের তাৎপর্য হলো তারা নবীজীর উচ্চ মর্তবা আরো বৃদ্ধি করার জন্য আল্লাহ তা‘আলার দরবারে দু‘আ করেন। আর তার উম্মাতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আর মানুষের পক্ষ দুরূদ প্রেরণের তাৎপর্য হলো তারা আল্লাহ তা‘আলার দরবারে এই আরজী করবে, তিনি যেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তার রহমত, ভালবাসা ও অনুকম্পা সর্বদায় জারী রাখেন এবং তার মর্যাদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে থাকেন। সর্বোপরি তাকে মাকামে মাহমূদ ও শাফাআত করার সর্বোচ্চ ক্ষমতা দান করেন। -সুনানে তিরমিযী, ১/৪৯৬ হাদীস নং- ৪৮৫ সহীহুল বুখারী, তাফসিরু সুরাতিল আহযাব

দুরূদে নারিয়া

اَللّهُمَّ صَلِّ صَلاَةً كاَمِلَةً وَ سَلِّمْ سَلاَماً تَاماً عَلي سَيِّدِناَ مُحًمَّدِنِ الَّذِيْ تَنْحَلُّ بِهِ العُقَدُ وَتَنْفَرِجُ بِه الكُرَبُ وَ تُقْضي بِه الحَوَائِجُ وَتُنَالُ بِه الرَغاَئِبُ وَحُسْنُ الخَوَاتِمِ وَيُسْتَسْقَي الغَماَمُ بِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَعَلي الِه وَصَحْبِه فِيْ كُلِّ لَّمْحَةٍ وَّنَفَسٍ بِعَدَدِ كُلِّ مَعْلُومٍ لَّكَ

উচ্চারন : আল্লাহুম্মা সাল্লি সালাতান কামিলাতান ওয়া সাল্লিম সালামান তাম্মান আলা সাইয়িদিনা মুহাম্মাদিনিল্লাযি তানহাল্লু বিহিল উক্বাদু ওয়া তানফারিজু বিহিল কুরাবু ওয়া তুকযা বিহিল হাওয়াইজু ওয়া তুনালু বিহির রাগাইবু ওয়া হুসনুল খাওয়াতিম ওয়া ইউসতাসক্বাল গামামু বি ওয়জহিহিল কারীম ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাহবিহি ফী কুল্লি লামহাতিও ওয়া নাফাসিন বিআদাদি কুল্লিম মা‘লুমিল লাকা।

 

কুরআনুল কারিমের কথা প্রবন্ধটি পড়তে ক্লিক করুন
আরো জানতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইট রাহে সুন্নাত ব্লগ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *