দ্বীনি মাদরাসাসমূহের লক্ষ্য বিজ্ঞানী গণিতবিদ কিংবা ইঞ্জিনিয়ার বানানো নয়
যে সকল লোক দ্বীনি মাদরাসাসমূহের নিয়ম-নীতির সাথে সরাসরি জড়িত নয় এবং যাদের এ শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই, তাদের পক্ষ হতে অনেক সময় এ ধরনের প্রস্তাব আসতে থাকে যে, এ সমস্ত মাদরাসার সিলেবাসে ‘বিজ্ঞান’ ‘গণিত’ ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদির মানসম্পন্ন শিক্ষার ব্যবস্থা হওয়া চাই। তাহলে যে সমস্ত আলেম এ সমস্ত মাদরাসা থেকে শিক্ষা সমাপন করে বের হবেন, তারা দ্বীনী ইলমের সাথে সাথে এ সমস্ত অভিজ্ঞতা বিষয়েও পুরোপুরি দক্ষতা ও দূরদর্শিতার অধিকারী হবেন।
এ মতটি যত ভাল নিয়তেই পেশ করা হোক না কেন, এটা একেবারেই অপরিনামদর্শী মত। যার ভিত্তি বস্তুতঃ দ্বীনী মাদরাসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজ্ঞতার উপর প্রতিষ্ঠিত।
প্রকৃতপক্ষে, দ্বীনী মাদ্রাসাসমূহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল : এ ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন উলামা তৈরী করা, যারা কুরআন, সুন্নাহ ও এতদসংশ্লিষ্ট জ্ঞানসমূহে বিজ্ঞ ও পারদর্শী হবে। আর এ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জন করার জন্য যে মানসিক একাগ্রতা ও পূর্ণ মনোযোগের প্রয়োজন, তাতে এক ব্যক্তি একই সময়ে উঁচুমানের যোগ্যতাসম্পন্ন আলেমে দ্বীনও হবে এবং সাথে সাথে যোগ্য ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী অথবা অর্থনীতিবিদও হবে, এটা খুবই দুষ্কর বিষয়।
একই ব্যক্তির জন্য যোগ্য আলেম হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানী হওয়া সম্ভব নয় এ বিষয়টি তো এমনিতেই সব যুগে স্বতঃসিদ্ধ ছিল; কিন্তু বর্তমান যুগ, যেটাকে সর্ব প্রকার জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষের যুগ বলা হয়, এ যুগে তো এটা দিবালোকের ন্যায় ভাস্বর হয়ে গেছে যে, একই ব্যক্তির জন্য যোগ্য আলেম হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানী হওয়া সম্ভব নয়।
আজ যদি কোন ব্যক্তি ডাক্তারী বিদ্যাকে নিজের নির্দিষ্ট বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করে নেয় এবং মেডিক্যাল সাইন্সে নৈপূণ্য অর্জন করে, তখন কোন বুদ্ধিমান তার সম্পর্কে এ আপত্তি করতে পারে না যে, সে ডাক্তার হওয়ার সাথে সাথে ইঞ্জিনিয়ার কেন হয়নি ? অথবা যদি কোন ব্যক্তি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ডিগ্রি লাভ করে, তখন তার উপর কোন বিবেকবান এ প্রশ্ন করে না যে, মেডিক্যাল সাইন্স সে কেন পড়েনি ?
এমনিভাবে যদি কোন বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান শিক্ষার উপর পূর্ণ জোর দেয়া হয়, তখন কোন ব্যক্তি সেখানে এ আপত্তি পেশ করে না যে, এ প্রতিষ্ঠানে সাহিত্য, কবিতা অথবা কমার্স বিষয়ের শিক্ষা কেন দেয়া হয় না। কোন কমার্স কলেজে এ প্রশ্ন করা হয় না যে, এখান থেকে ইঞ্জিনিয়ার কেন তৈরী হয় না ? কোন ‘ল’ কলেজের ব্যাপারেও এ মতামত শোনা যায়নি যে, এর মধ্যে জ্যোতির্বিদ্যাও শিক্ষা দেয়া চাই ।
আমাদের লক্ষ্য ইসলামী শিক্ষায় দক্ষ ব্যক্তিত্ব তৈরী করা
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন হয় যে, যদি দ্বীনি মাদারাসাসমূহের পূর্ণ দৃষ্টি ইসলামী শিক্ষায় দক্ষ ব্যক্তি গঠনের প্রতি নিবন্ধ হয়, আর সেখান থেকে কোন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী বা অর্থনীতিবিদ তৈরী না হয়, তবে এ নিয়ে এ রকম আপত্তি ও হৈ চৈ কেন করা হয় ? তাফসীর, হাদীস, ফিকাহ, দর্শন ও তদসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো কি এমন শিক্ষা নয় যে, এগুলোর শিক্ষাদানের জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান থাকবে, যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে এ বিষয়গুলোর উপর চেষ্টা-মেহনত করে এগুলোর খিদমত আঞ্জাম দিবে এবং এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ উলামা তৈরী করবে? যদি কোন ব্যক্তি বাস্তবেই এমন মনে করে থাকে, তবে তার অজ্ঞতার জন্য আক্ষেপ করা ছাড়া আর কী করা যেতে পারে ?
কিন্তু যদি কোন বক্তি এ বিষয়গুলোর গুরুত্ব ও মহত্ত্বের সামান্যতম অনুভূতি রাখে, তবে তার জন্য এটা বুঝতে বেগ পেতে হবে না যে, উলামায়ে দ্বীনের ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী হওয়ার আশা করা কত ঠুনকো, অবাস্তব ও অযৌক্তিক বিষয় ।
চারটি সোনালি আমল । প্রথম আমল : শোকর
চারটি সোনালি আমল : দ্বিতীয় আমল : সবর
চারটি সোনালি আমল : তৃতীয় আমল ইস্তেগফার
চারটি সোনালি আমল । চতুর্থ আমল : ইস্তে‘আযা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরীত চিঠির ব্যাখ্যা PDF ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন
মহানবী জগতের আদর্শ মহামানব। ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
মানব জাতির মুক্তি ও কামিয়াবী সুরাতুল আসরের ৪ মূলনীতির আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক