ফিদিয়ার পরিচয়, আদায়ের পদ্ধতি এবং ফিদিয়ার হকদার কে?
আমাদের সমাজে একটি ভুল ধারণা রয়েছে, তা হলো বদলি রোজা। অনেকে মনে করেন, কোনো ব্যক্তি অসুস্থতা কিংবা বার্ধক্যজনিত কারণে রোজা রাখতে অপারগ হলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি রোজা রাখাতে হয়। বিষয়টি আসলে সে ধরনের নয়। বদলি রোজা বলতে ইসলামে কোনো পরিভাষা নেই। যাকে আপনি বদলি রোজার জন্য ঠিক করছেন, তার রোজা কে রাখবে? আমরা যেটিকে বদলি রোজা ভাবি, তা আসলে ‘ফিদিয়া’।
ফিদিয়ার পরিচয়
কোনো ভুলভ্রান্তির দরুন শরিয়তের পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া বিনিময়কে ফিদিয়া বলা হয়। ওই বিনিময় অপারগতার কারণে কোনো শারীরিক ইবাদত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শরিয়তের পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলক করা হয়। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
‘আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া একজন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো।’ -সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৫
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘যারা সওম পালনে সক্ষম নয়, তাদের জন্য একজন মিসকিনকে খানা খাওয়ানোই ফিদিয়া।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ আয়াত রহিত হয়নি। এ বিধান ওই অতিবৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জন্য, যারা সওম পালনে সক্ষম নয়। এরা প্রতিদিনের সওমের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে পেট পুরে আহার করাবে।
ফিদিয়া কখন প্রদান করা হবে?
আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের ওপর কোনো অসাধ্য কাজ চাপিয়ে দেননি। তাই পবিত্র রমজান মাসেও রোজা রাখতে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিকল্প বিধান রাখা হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি অসুস্থতার দরুন অভিজ্ঞ কোনো ডাক্তারের বিবেচনায় রোজা রাখতে অক্ষম হয় এবং পরে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সুস্থ হওয়ার পর রোজার কাজা আদায় করতে হবে। ওই ব্যক্তির জন্য ফিদিয়া নয়। তবে যদি ওই অসুস্থ ব্যক্তি কাজা করার আগেই ইন্তেকাল করেন, তাহলে তাঁর পক্ষ থেকে আত্মীয়-স্বজন ফিদিয়া আদায় করবে। কেননা মারা যাওয়ার দরুন তাঁর আর কাজা করার সুযোগ নেই। -হেদায়া : ২/১২০
আর যদি অসুস্থ ব্যক্তির আরোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে কিংবা এমন বৃদ্ধ হন যে কখনোই রোজা রাখার মতো সামর্থ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই, তাহলে ফিদিয়া আদায় করবে। -ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৫/৪৫৫
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
‘তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। (কাজা করে নেবে) আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া আদায় করা অর্থাৎ একজন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো।’-সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৪
দরিদ্ররা কিভাবে ফিদিয়া আদায় করবে?
ফিদিয়া দেওয়ার ক্ষেত্রে ধনী-গরিবের মধ্যে কোনো তারতম্য নেই। তবে দারিদ্র্যের দরুন ফিদিয়া দিতে একেবারেই অক্ষম হলে তাওবা করবে। পরে কখনো সামর্থ্যবান হলে অবশ্যই ফিদিয়া আদায় করে দেবে। -ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৫/৪৫৫
ফিদিয়ার পরিমাণ
শরিয়ত মোতাবেক কেউ রোজা রাখার সামর্থ্যহীন হলে প্রতিটি রোজার জন্য একটি করে ‘সদকাতুল ফিতর’-এর সমপরিমাণ গম বা তার মূল্য গরিবদের দান করাই হলো রোজার ‘ফিদিয়া’। অতিশয় বৃদ্ধ বা গুরুতর রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, যার সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই অথবা রোজা রাখলে জীবনহানির আশঙ্কা থাকে, তারা রোজার বদলে ফিদিয়ার আদায় করবে। পরবর্তী সময়ে ওই ব্যক্তি যদি সুস্থ হয়ে রোজা রাখার মতো শক্তি ও সাহস পায়, তাহলে তার আগের রোজার কাজা আদায় করতে হবে। তখন আগে আদায়কৃত ফিদিয়ার সদকা হিসেবে গণ্য হবে।
অসুস্থ ব্যক্তি ফিদিয়ার আদায় না করে মারা গেলে তার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে ফিদিয়ার আদায় করা কর্তব্য; যদি মৃত ব্যক্তি অসিয়ত করে যায়। অন্যথায় আদায় করা মুস্তাহাব। উল্লেখ্য যে প্রতিটি রোজার ফিদিয়ার হলো একটি সদকাতুল ফিতর অর্থাৎ ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম আটা বা তার সমমূল্য দরিদ্র এতিম বা মিসকিনকে দান করা অথবা একজন ফকির বা গরিবকে দুই বেলা পেট পুরে খাওয়ানো।
রোজার ফিদিয়ার বিষয়ে কোরআনে এসেছে, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
‘আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া একজন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো।’ -সূরা : বাকারা : ১৮৪
অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি রোজা রাখতে একান্ত অপারগ হলে সে প্রতিদিন একজন দরিদ্রের পেট ভরে দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করবে। কেউ চাইলে নগদ টাকাও দিয়ে দিতে পারে। প্রত্যেক রোজার জন্য ফিদিয়ার ন্যূনতম পরিমাণ হলো, সদকায়ে ফিতরের সমান। -আল ইনায়াহ : ২/২৭৩
ফিদিয়া কাদের দেওয়া যাবে?
ফিদিয়ার হকদার গরিব-মিসকিনরা, যারা জাকাতের হকদার। ফিদিয়া কোনো দ্বিনি প্রতিষ্ঠান, যেখানে যাকাতের হকদার আছে, সেখানেও দেওয়া যাবে। -আল ইনায়াহ : ২/২৭৩
আমাদের সমাজে একটি ভুল ধারণা রয়েছে, তা হলো বদলি রোজা। অনেকে মনে করেন, কোনো ব্যক্তি অসুস্থতা কিংবা বার্ধক্যজনিত কারণে রোজা রাখতে অপারগ হলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি রোজা রাখাতে হয়। বিষয়টি আসলে সে ধরনের নয়। বদলি রোজা বলতে ইসলামে কোনো পরিভাষা নেই। যাকে আপনি বদলি রোজার জন্য ঠিক করছেন, তার রোজা কে রাখবে? আমরা যেটিকে বদলি রোজা ভাবি, তা আসলে ‘ফিদিয়া’।
ফিদিয়ার পরিচয়
কোনো ভুলভ্রান্তির দরুন শরিয়তের পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া বিনিময়কে ফিদিয়া বলা হয়। ওই বিনিময় অপারগতার কারণে কোনো শারীরিক ইবাদত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শরিয়তের পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলক করা হয়। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
‘আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া একজন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো।’ -সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৫
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘যারা সওম পালনে সক্ষম নয়, তাদের জন্য একজন মিসকিনকে খানা খাওয়ানোই ফিদিয়া।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ আয়াত রহিত হয়নি। এ বিধান ওই অতিবৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জন্য, যারা সওম পালনে সক্ষম নয়। এরা প্রতিদিনের সওমের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে পেট পুরে আহার করাবে।
ফিদিয়া কখন প্রদান করা হবে?
আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের ওপর কোনো অসাধ্য কাজ চাপিয়ে দেননি। তাই পবিত্র রমজান মাসেও রোজা রাখতে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিকল্প বিধান রাখা হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি অসুস্থতার দরুন অভিজ্ঞ কোনো ডাক্তারের বিবেচনায় রোজা রাখতে অক্ষম হয় এবং পরে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সুস্থ হওয়ার পর রোজার কাজা আদায় করতে হবে। ওই ব্যক্তির জন্য ফিদিয়া নয়। তবে যদি ওই অসুস্থ ব্যক্তি কাজা করার আগেই ইন্তেকাল করেন, তাহলে তাঁর পক্ষ থেকে আত্মীয়-স্বজন ফিদিয়া আদায় করবে। কেননা মারা যাওয়ার দরুন তাঁর আর কাজা করার সুযোগ নেই। –হেদায়া : ২/১২০
আর যদি অসুস্থ ব্যক্তির আরোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে কিংবা এমন বৃদ্ধ হন যে কখনোই রোজা রাখার মতো সামর্থ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই, তাহলে ফিদিয়া আদায় করবে। -ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৫/৪৫৫
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
‘তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। (কাজা করে নেবে) আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া আদায় করা অর্থাৎ একজন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো।’ -সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৪
দরিদ্ররা কিভাবে ফিদিয়া আদায় করবে?
ফিদিয়া দেওয়ার ক্ষেত্রে ধনী-গরিবের মধ্যে কোনো তারতম্য নেই। তবে দারিদ্র্যের দরুন ফিদিয়া দিতে একেবারেই অক্ষম হলে তাওবা করবে। পরে কখনো সামর্থ্যবান হলে অবশ্যই ফিদিয়া আদায় করে দেবে। -ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৫/৪৫৫
ফিদিয়ার পরিমাণ
শরিয়ত মোতাবেক কেউ রোজা রাখার সামর্থ্যহীন হলে প্রতিটি রোজার জন্য একটি করে ‘সদকাতুল ফিতর’-এর সমপরিমাণ গম বা তার মূল্য গরিবদের দান করাই হলো রোজার ‘ফিদিয়া’। অতিশয় বৃদ্ধ বা গুরুতর রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, যার সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই অথবা রোজা রাখলে জীবনহানির আশঙ্কা থাকে, তারা রোজার বদলে ফিদিয়ার আদায় করবে। পরবর্তী সময়ে ওই ব্যক্তি যদি সুস্থ হয়ে রোজা রাখার মতো শক্তি ও সাহস পায়, তাহলে তার আগের রোজার কাজা আদায় করতে হবে। তখন আগে আদায়কৃত ফিদিয়ার সদকা হিসেবে গণ্য হবে।
অসুস্থ ব্যক্তি ফিদিয়ার আদায় না করে মারা গেলে তার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে ফিদিয়ার আদায় করা কর্তব্য; যদি মৃত ব্যক্তি অসিয়ত করে যায়। অন্যথায় আদায় করা মুস্তাহাব। উল্লেখ্য যে প্রতিটি রোজার ফিদিয়ার হলো একটি সদকাতুল ফিতর অর্থাৎ ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম আটা বা তার সমমূল্য দরিদ্র এতিম বা মিসকিনকে দান করা অথবা একজন ফকির বা গরিবকে দুই বেলা পেট পুরে খাওয়ানো।
রোজার ফিদিয়ার বিষয়ে কোরআনে এসেছে, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
‘আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া একজন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো।’ -সূরা : বাকারা : ১৮৪
অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি রোজা রাখতে একান্ত অপারগ হলে সে প্রতিদিন একজন দরিদ্রের পেট ভরে দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করবে। কেউ চাইলে নগদ টাকাও দিয়ে দিতে পারে। প্রত্যেক রোজার জন্য ফিদিয়ার ন্যূনতম পরিমাণ হলো, সদকায়ে ফিতরের সমান। -আল ইনায়াহ : ২/২৭৩
ফিদিয়া কাদের দেওয়া যাবে?
ফিদিয়ার হকদার গরিব-মিসকিনরা, যারা জাকাতের হকদার। ফিদিয়া কোনো দ্বিনি প্রতিষ্ঠান, যেখানে যাকাতের হকদার আছে, সেখানেও দেওয়া যাবে। -আল ইনায়াহ : ২/২৭৩
“আল কুরআনের আদব” বিষয়ে পড়তে ক্লিক করুন
“কুরআনুল কারিমের কথা” প্রবন্ধটি পড়তে ক্লিক করুন
আরো জানতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইট রাহে সুন্নাত ব্লগ