সিরিয়ার গর্ভনর আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ রাযি.
আমীরুল মুমিনিন হযরত ওমর রাযি. যামানায় হযরত আবু উবাইদা রাযি. কে সিরিয়ার গর্ভণর নিযুক্ত করা হয়ে ছিলো। কারণ সিরিয়ার বেশীর ভাগ অঞ্চল তিনিই জয় করে ছিলেন। তখন সিরিয়া ছিল অনেক বড় একটি অঞ্চল। অনেক ধন-সম্পদ ছিল সেখানে। একবার আমীরুল মুমিনিন হযরত ওমর রাযি. অবস্থা প্রত্যক্ষ করার জন্য সিরিয়া পরিদর্শনে বের হলেন। পরিদর্শনের সময় হযরত ওমর রাযি. বললেন, আবু উবাইদা! তুমি যে বাড়িতে থাক আমার মন সেই বাড়িটি দেখতে চাই। হযরত ওমর রাযি. এর মাথায় এ কথাটি এসেছিলো যে, আবু উবাইদা রাযি. এত বড় প্রদেশের গর্ভণর হয়ে গেছে। আর সেখানে ধন-দৌলতও সীমাহীন। এই জন্য তার বাড়ি দেখা প্রয়োজন। যদি তিনি সেখানে কিছু জমা করে থাকেন? আবু উবাইদা রাযি. জবাব দিলেন, আমীরুল মুমিনিন আপনি আমার বাড়ি দেখে কি করবেন? কারণ যখন আপনি আমার বাড়ি দেখবেন তখন আপনার চোখে ঘোলা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবেন না।
হযরত ওমর রাযি. কে সঙ্গে নিয়ে চলতে লাগলেন। শহরের ভিতর দিয়ে যেতে যেতে শহরের জনপদ শেষ হয়ে গেলো। তখন ওমর রাযি. জিজ্ঞাসা করলেন, আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ! আবু উবাইদা রাযি. জবাব দিলেন, এই তো কাছেই এসে গেছি। ধন-দৌলত আর ঐশ্যর্য টয় টম্বুর দামী সব নগরী পার হয়ে খেজুর পাতা দিয়ে নির্মিত একটি ঝুপড়ির কাছে গিয়ে ইশারা করে বললেন। আমীরুল মুমিনিন! আমি এখানে থাকি। যখন আমীরুল মুমিনিন ভিতরে প্রবেশ করলেন। তখন চার দিকে নজর ভুলিয়ে একটি জায়নামায ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না। আমীরুল মুমিনিন জিজ্ঞাসা করলেন, আবু উবাইদা! তুমি এখানে থাক? এখানে তো কোন আসবাবপত্র নেই। কোন বাসন পোষন নেই। খাওয়া-দাওয়া শুবার ব্যবস্থাওতো নেই। এখানে তুমি কিভাবে থাক?
সিরিয়ার গর্ভনর আবু উবাইদা রাযি. জবাব দিলেন, আমীরুল মুমিনিন! আমার প্রয়োজনের সব কিছুই এখানে আছে। এই যে জায়নামায এর উপর নামায পড়ি এবং রাতে এর উপরই ঘুমায়। এরপর তিনি উপরের ছাওনির দিকে হাত বাড়িয়ে সেখান থেকে একটি পেয়ালা বের করলেন যেটি দেখা যাচ্ছিলো না। সে টি দেখিয়ে বললেন এই তো বাসন। হযরত ফারুক রাযি. সেটি হাতে নিয়ে দেখেন তাতে লবন মিশ্রিত পানি এবং রুটির কয়েকটি শুকনো টুকরা আছে।
আবু উবাইদা রাযি. বললেন, আমীরুল মুমিনিন! আমি তো দিন রাত হুকুমতের কাজে ব্যস্ত থাকি এ জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার সুযোগ পাইনা। এক মহিলা আমার জন্য দুই তিন দিনের রুটি এক সাথে পাকিয়ে দেন যখন সেগুলো শুকিয়ে যায় তখন পানিতে ভিজিয়ে রাখি এবং রাতে শোয়ার সময় খেয়ে ফেলি। এ অবস্থা দেখে হযরত ওমর রাযি. কাঁদতে শুরু করলেন।
ভাষান্তর : আবু তাসনীম উমাইর
কুরআনুল কারিমের কথা প্রবন্ধটি পড়তে ক্লিক করুন
আরো জানতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইট রাহে সুন্নাত ব্লগ
আরো জানতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইট রাহে সুন্নাত ব্লগ