>>>>>সুন্নাতের বরকত<<<<<
সুন্নাতের উপর আমলের বরকতে পর্দা পালন সহজ হয়ে যায়
বর্তমানে পর্দার ব্যাপারে মারাত্মক উদাসিনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইশরাক, তাহাজ্জুদ, আওয়াবিনের নামায পড়া সহজ, কিন্তু শরঈ পর্দার উপর আমল করা খুবই কঠিন। কতজন খালু আছেন যারা ভাগনীর সাথে পর্দা করেন? আর কতজন ভাগনী আছে নিজ খালুর সাথে পর্দা করে? আমি তো একটি কথা বলি, খালুকে এখন আলু বানিয়ে নিয়েছে। অথবা ভাল্লুক বানিয়ে রেখেছে। আচ্ছা বলুন তো ভাল্লুকের নিকটে কেউ কি যায়? কেউ যায় না। অনুরূপ ভাবে খালুর সাথে পর্দা করতে হবে। যেখানে চাচাত বোনের সাথে পর্দা করা জরুরী সেখানে চাচীর সাথেও পর্দা করা জরুরী। যেখানে মামাতো বোনের সাথে পর্দা করা জরুরী সেখানে মামীর সাথেও পর্দাা করা জরুরী।
আজ এটাইতো আমাদের কমতি, ভাবীর সাথে পর্দার বিধান রক্ষা করনে ওয়ালা কতজন লোক রয়েছে। অনেক স্থানে দেখা যায় স্বামীর বড় ভাইয়ের সাথে পর্দা করে ঠিক কিন্তু স্বামীর ছোট ভাইয়ের সাথে পর্দা রক্ষা করে না। স্ত্রীর বোনের সাথে (শালীর সাথে) পর্দা করে কতজন লোক রয়েছে? এই হলো মুসলমানের জিন্দেগীর চিত্র। আর এর কারণ হলো, দ্বীনের দিক থেকে দূর্বলতা যার ফলে নেক আমল করার হিম্মত পায় না। সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ এই তিনটি সুন্নাতের উপর আমল শুরু করার দ্বারা নিজের মধ্যে শক্তি সঞ্চার হবে। যার বরকতে নেক আমল করা সহজ হয়ে যায়। অভিজ্ঞতার কথা, শক্তি বর্ধক ঔষধ খেলে শক্তি হবেই।
সুন্নাতের উপর আমলকারী আল্লাহ পাকের প্রিয় হয়ে যায়। আমাদের আকাবীর বুর্যুগানে দ্বীনের প্রতি লক্ষ্য করুন তাদের মধ্যে কি বৈশিষ্ট্য ছিল এবং অন্যদের নিকট তাদের গ্রহণযোগ্যতা আর মকবুলিয়্যাত কতটুকু আছে। মানুষের মাঝে উনারা কি পরিমাণ সম্মানের পাত্র? তারা কি মনি মুক্তা খেতেন? বাস! শুধু সুন্নাতের উপর আমল করতেন। আর এই সুন্নাতের উপর আমলের বরকতেই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এত সম্মান আর ইজ্জত দান করেছেন।
আজ যে সমস্ত মহামনিষীরা সুন্নাতকে আকঁড়ে ধরে আছে তাদেরকে আমরা উলামায়ে রব্বানী ও মাশায়েখে হককানী বলে থাকি। কোন মজলিসে আগত মেহমানগণ প্রত্যেকেই যদি আতর লাগিয়ে আসে তাহলে পরিবেশটা কত মনমুগ্ধকর হবে? যে দিকেই তারা যাবে সে দিকেই মানুষের মস্তিষ্ক সুবাসিত হবে। অনুরূপ ভাবে প্রতিটা মুমিন বান্দা যদি সুন্নাতের উপর আমল শুরু করে দেয় তাহলে পরিবর্তিতে বুঝতে পারবে তার ফলাফল কি প্রকাশ পায়। পরিবেশ কিভাবে পরিবর্তন হয়?
আজ আমরা সুন্নাতকে কিতাবের মধ্যে বন্ধ করে রেখেছি। কিতাবের মধ্যে সুন্নাতের আলোচনা আছে ঠিক কিন্তু আমলী জিন্দিগীতে তার কোন বাস্তবায়ন নাই। আতর যদি শিশির ভিতর রেখে মুখ বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে এই আতর দ্বারা তাঁর নিজের এবং এলাকাবাসীর কি উপকার করতে পারবে? আর অপর দিকে কেউ যদি শরীরে আতর লাগিয়ে চলে তাহলে তার নিজের মস্তিষ্কটাও তরুতাজা থাকবে এবং অন্যরাও উপকৃত হবে।সুন্নাতের উপর আমল করার দ্বারা নিজেরও উপকার হয় অন্যরাও উপকৃত হয়।
মোটকথা : সুন্নাতের বরকত অতুলনীয় একটি নিআমত। আর পরিপূর্ণ ঈমানের আলামত হলো নেক কাজ করলে অন্তরে শান্তি পায়। আর গোনাহ করলে মনে কষ্ট লাগে, যদি এই অবস্থাটা কারও মাঝে তৈরী হয়ে যায় তাহলে তো শুকরিয়ার বিষয়, আর যদি না হয় তাহলে চিন্তার বিষয়। চিকিৎসার প্রয়োজন। আর চিকিৎসার জন্য দুটি বিষয়ের দরকার। এক নাম্বার হলো গোনাহ থেকে বিরত থাকা, দ্বিতীয় বিষয় সুন্নাতের উপর গুরুত্বের সাথে আমল করা। যার পদ্ধতিও পূর্বে বলে দেয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক আমল করতে থাকো, ইন্শাআল্লাহ সুন্নাতের বরকতে ঈমানের হাকীকত এবং কামেল ঈমানের বৈশিষ্ট্যও অর্জন করা যাবে। দু’আ করুন আল্লাহ তাআলা এই কথাগুলোকে কবুল করুন এবং আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন