হিজরী নববর্ষের ইতিকথা

হিজরী নববর্ষের ইতিকথা History of Hijri New Year

ইসলাম প্রতিদিন

হিজরী নববর্ষের ইতিকথা

نَحْمَدُه وَنُصَلِّىْ عَلٰى رَسُوْلِهِ الْكَرِيْمِ أَمَّا بَعْدُ! فَاَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ. بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ اِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عِنْدَ اللّٰهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِیْ كِتٰبِ اللّٰهِ یَوْمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ مِنْهَاۤ اَرْبَعَةٌ حُرُمٌ الخ ـ صَدَقَ اللهُ الْعَظِيْمُ ـ

মুহাররম মাস ইসলামী পুঞ্জিকার প্রথম মাস। রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে ও তার পূর্বে রোমান, পারস্যিয়ান ও অনান্য জাতির মধ্যে তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার বা পঞ্জিকা প্রচলিত ছিল। আরবদের মধ্যে কোনো নির্ধারিত বর্ষ গণনা পদ্ধতি ছিল না। বিভিন্ন ঘটনার উপর নির্ভর করে তারিখ বলা হতো। যেন অমুক ঘটনার এতো বছর পরে…. ।

হিজরী সন মুসলিম উম্মাহর ঐতিহ্য। হিজরী সনের তারিখ স্মরণ রাখা এবং প্রাত্যহিক জীবনে তা ব্যবহার করার সাথে বিশ্ব মুসলিমের জাতীয় ঐতিহ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ইসলামে হিজরী সনের হিসাব রক্ষার ব্যাপারে যথার্থ গুরুত্ব রয়েছে।

চন্দ্র তারিখের হিসাব রক্ষা করা মুসলমানদের জন্য ফরযে কিফায়া। অর্থাৎ সকলের সমষ্টিগত জিম্মাদারি। তবে শরয়ী ফরয ইবাদত সংশিষ্ট হিজরী মাস অবগতি লাভ করে তা যথাযথ পালন করা ইবাদতকারীর জন্য ফরযে আইন।

অনুরূপভাবে ইসলামী শরীয়ার অধিকাংশ আহ্কামাবলি অর্থাৎ নামায, রোযা, হজ, যাকাত, বছর, মাস, ইদ্দত ইত্যাদি হিজরী সনের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। তাইতো শরীয়তের দৃষ্টিতে চান্দ্র ও সৌর হিসাবের গুরুত্ব পবিত্র কুরআনে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষিত হচ্ছে-

یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الْاَهِلَّةِ ؕ قُلْ هِیَ مَوَاقِیْتُ لِلنَّاسِ وَ الْحَجِّ ؕ وَ لَیْسَ الْبِرُّ بِاَنْ تَاْتُوا الْبُیُوْتَ مِنْ ظُهُوْرِهَا وَ لٰكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقٰی ۚ وَ اْتُوا الْبُیُوْتَ مِنْ اَبْوَابِهَا ۪ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ـ

হে নবী! আপনার কাছে তারা জিজ্ঞেস করে নতুন চাঁদের বিষয়ে? আপনি বলে দিন, এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারক এবং হজের সময় ঠিক করার মাধ্যমে। -সূরা বাকারা আয়াত : ১৮৯ রুকু— ২৩

পূর্বে উল্লিখিত আয়াতে এতটুকু বোঝা গেল, চন্দ্রের দ্বারা তোমরা তারিখ ও মাসের হিসাব জানতে পারবে যার উপরে তোমাদের লেনদেন আদান প্রদান এবং হজ্জ প্রভৃতির ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত। এ প্রসঙ্গটি সূরা ইউনুসে বিবৃত হয়েছে-

هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِیَآءً وَّ الْقَمَرَ نُوْرًا وَّ قَدَّرَهٗ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِیْنَ وَ الْحِسَابَ ؕ مَا خَلَقَ اللّٰهُ ذٰلِكَ اِلَّا بِالْحَقِّ ۚ یُفَصِّلُ الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یَّعْلَمُوْنَ

ইরশাদ হচ্ছে মহান সত্তা, যিনি সূর্যকে বানিয়েছেন আলোকময় আর চন্দ্রকে বানিছেন নূর বিকিরণকারীরূপে, অনন্তর নির্ধারিত করেছেন বিভিন্ন মনজিলসমূহ। যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। -সূরা ইউনূস, আয়াত : ৫, রুকু—১

এই আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন অবস্থার মধ্যে দিয়ে চন্দ্রের পরিক্রমণের উপকারিতা এই যে, এর দ্বারা বর্ষ, মাস ও তারিখের হিসাব জানা যায়। কিন্তু সূরা বনি—ইসরাঈলের আয়াতে বর্ষ মাস ও দিনক্ষণের হিসাব যে সূর্যের সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত তা ও বিবৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-

وَ جَعَلْنَا الَّیْلَ وَ النَّهَارَ اٰیَتَیْنِ فَمَحَوْنَاۤ اٰیَةَ الَّیْلِ وَ جَعَلْنَاۤ اٰیَةَ النَّهَارِ مُبْصِرَةً لِّتَبْتَغُوْا فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِیْنَ وَ الْحِسَابَ ـ

অতঃপর আমি রাতের চিহ্নকে তিরোহিত করে দিনের চিহ্নকে দর্শনযোগ্য করলাম, যাতে তোমরা মহান আল্লাহর অনুগ্রহের দান রুজি রোজগারের অনুসন্ধান করতে পার এবং যাতে তোমরা বর্ষপঞ্জি ও দিনক্ষণের হিসাব অবগত হতে পার। -সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত ১২, রুকু—১

এই তৃতীয় আয়াত দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো, বর্ষ, মাস ইত্যাদির হিসাব সূর্যের আহ্নিকগতি এবং বার্ষিকগতি দ্বারাও নির্ণয় করা যায়। কিন্তু চন্দ্রের ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন যে ভাষা প্রয়োগ করেছে তাতে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামী শরীয়তে চান্দ্র মাসের হিসাবই নির্ধারিত রমযানের রোযা, হজের মাস ও দিনসমূহ সবই রুইয়াতে হেলাল বা নতুন চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। কেননা এই আয়াতে এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজ্জের সময় ঠিক করার মাধ্যম বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। যদিও এই হিসাব সূর্যের দ্বারাও অবগত হওয়া যায়, তবুও আল্লাহর দরবারে চন্দ্রমাসের হিসাবই নির্ভরযোগ্য।

ইসলামী শরীয়ত কতৃর্ক চান্দ্রমাসের হিসাব গ্রহণ করার কারণ এই যে, প্রত্যেক দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিই আকাশে চাঁদ দেখে চান্দ্রমাস সম্পর্কে অবগত হতে পারে। পণ্ডিত মুন গ্রামবাসী মরুবাসী পার্বত্য উপজাতি ও সভ্য অসভ্য নির্বিশেষে সবার জন্য চান্দ্রমাসের হিসাব সহজ ।

এবার আসুন মূল আলোচনায় চলে যাই। ইসলামী প্রশাসনের লৌহমানব বাতিলের ত্রাস হযরত উমর ফারুক রাযি.—এর একনিষ্ঠ গভর্নর আবু মুসা আশ‘আরী রাযি. একদা খলিফার সমীপে এ মর্মে পত্র প্রেরণ করলেন, আমীরুল মুমিনীনের তরফ থেকে পরামর্শ সম্বলিত যে সব উপদেশবাণী এসে থাকে তাতে কোনো তারিখ দেয়া থাকে না। যার দরুন পরবর্তী নির্দেশাবলির সাথে বিরাট জটিলতার সৃষ্টি হয়। ফলে তার ওপর যথার্থ আমল অসম্ভব হয়ে পড়ে।

হযরত আবু মুসা আশয়ারী রাযি.—এর পত্র পেয়ে ব্যাপারটি বিবেচনার জন্য হযরত আমীরুল মুমিনীন মজলিসে শূরার বৈঠকের আয়োজন করলেন। তদানীন্তন প্রবীণ দক্ষ সাহাবায়ে কেরামকে উক্ত পরামর্শ সভায় আহ্বান করলেন। সেথায় হযরত উসমান, আলী সাহাবীদ্বয় এবং পারস্যের হুরমুজান নামক এক ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলেন।

তিনি সেখানে তার দেশের ক্যালেন্ডারের বিবরণ দিলেন। পরামর্শ শেষে সবাই এ কথার ওপর একমত হলো, হিজরী সন প্রবর্তন হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু কোন মাস থেকে এ তারিখের সূচনা হবে এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিল কখন থেকে কোন মাসে কীভাবে তারিখ গণনা আরম্ভ করা হবে? কেউ বললেন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের মাস থেকে।

কারো কারো মত ছিল প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের মাস থেকে। আবার কেউ বললেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রিসালাত প্রাপ্তির মাস থেকে এ তারিখের সূচনা করা হোক। এভাবে যখন বিভিন্ন অভিমত উপস্থাপিত হলো, তখন উমর ফারুক রাযি. বললেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম ও রিসালাত প্রাপ্তির মাস থেকে এর সূচনা করা যাবে না।

কারণ, এ দু’টিতে প্রকারান্তরে খ্রিস্টানদের সাথে অনুসরণ হয়ে যায়, যা খুবই নিন্দনীয়। আর যদি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের মাস থেকে এর সূচনা করা হয়, তবে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের ব্যথা বারবার স্মরণ হতে থাকবে, যা হবে জাতির জন্য রসমমাত্র। তাই এটাকেও নাকচ করা হলো এবং সবাই দৃঢ় মনোবলে বললেন আমাদের ইসলামী তারিখ অবশ্যই স্বাতন্ত্র্য ও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।

এরপর সিদ্ধান্ত হলো, ইসলামী তারিখের সূচনা হবে ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিজরত থেকে। যা সর্বাধিক যৌক্তিক, ফলপ্রসূ ও কার্যকর। এরপর সেটাই সরকারিভাবে ঘোষিত হলো। এভাবে প্রবর্তিত হলো হিজরী সন। মুসলিম উম্মাহ হিসাবে আমাদের হিজরী সন ব্যবহারের পক্ষে একটা চেতনা সৃজন প্রয়োজন। এতে একদিকে যেমন সন গণনার কাজ সম্পন্ন হবে, তেমনি পাশাপাশি এর মাধ্যমে ইসলামী ঐতিহ্য—চেতনাও লালিত হবে।

কিন্তু সৌর মাস ও সৌর বছর এর সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। এর হিসাব জ্যোতিষবিদদের ব্যবহার্য দূরবীক্ষণ যন্ত্রসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি এবং ভৌগলিক জ্যামিতিক ও জ্যোতির্বিদ্যার সূক্ষ্ম নিয়মকানুনের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। এই হিসাবে প্রত্যেকের পক্ষে সহজে অবগত হওয়া বাধ্যতামূলক করা হলেও সাধারণ ব্যবসা—বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রেও এ হিসাবেরই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

চাঁদ ইসলামী এবাদতের অবলম্বন। চাঁদ এক হিসাবে ইসলামের প্রতীক বা শিআরে ইসলাম। ইসলাম যদিও সৌরপঞ্জি ও সৌর হিসাব নাজায়েয বলেনি। তবুও এতটুকু সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। যেন সৌর হিসাব এত প্রাধান্য লাভ না করে, যাতে লোকেরা চন্দ্রপঞ্জি ও চান্দ্র মাসের হিসাব ভুলেই যায়। কারণ এরূপ করাতে রোযা হজ্জ ইত্যাদি এবাদতে ক্রটি হওয়া অবশ্যম্ভাবী। তখন সৌর মাস ও বছর গণনা নিন্দনীয় বলে বিবেচিত হবে।

হিজরী সনের বারটি মাসে এমন কিছু এবাদত রয়েছে যেগুলো হিজরী সনের আলোকে মাস গণনা ছাড়া সঠিক সময় নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।

হিজরী সন সাম্প্রতিক বিশ্বের প্রায় দেড়শো কোটি ইসলামপন্থীদের অতি পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ অবলম্বন। শুধু এই একটি কারণেই মুসলিম হিজরীসন জাহানের সর্বত্র সমানভাবে সমাদৃত।

আন্তর্জাতিকভাবে গৃহিত ও স্বীকৃত রীতি হিসাবেও হিজরী সন গ্রহণযোগ্য। এই সনের সম্পর্ক ও সামঞ্জস্যতা রয়েছে চাঁদের সাথে। যে সন চাঁদের হিসাবে গণনা করা হয়, তাকে বলা হয় হিজরী সন। আর যে সন সৌর হিসাবে গণনা করা হয়, তাকে বলা হয় সৌর সন।

ঐতিহাসিক ঘটনা ও স্মৃতিসমূহ ধরে রাখার মানসিকতা থেকে তারিখ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয়তা ও তাৎপর্যের অনুভব থেকে এবং দিন মাস বছর গণনার জোর তাগিদ থেকে মানব সভ্যতার সেই ঊষালগ্ন হতেই বর্ষ গণনার উদ্ভব ঘটে। উদ্ভব ঘটেছে সন বা সালের। হিজরী সনই সর্ব প্রাচীন। এই হিজরী সন সারা বিশ্বে ইসলাম প্রচারের সাথে সাথে প্রচলিত হয়েছে।

মুসলিম জাহানে চাঁদের হিসাবে অনেক ইবাদত—বন্দেগি, আমল, আচার—অনুষ্ঠান ইত্যাদি পালিত হওয়ায় হিজরী সন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ও তাৎপর্যপূর্ণ স্মারক হিসাবে সর্বমুসলিম অন্তরজুড়ে সমানভাবে স্থান করে নিয়েছে। এই সনের নবম মাস মাহে রমযানুল মুবারককে সর্বাধিক মুবারক ও মর্যাদার মাস বলা হয়েছে। আর এই মাসের ২৭ এর রাত অনেকের মতে লাইলাতুল ক্বদর বা হাজার মাসের তুলনায় উত্তম।

হিজরী নববর্ষের শুরুর মাস হচ্ছে মুহাররম। যার অর্থই হচ্ছে অলঙ্ঘনীয় পবিত্র। এই মুহাররমের ১০ তারিখকে বলা আশুরা বা বিশ্বের আদিকাল থেকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নানান ঘটনার নীবর সাক্ষী।

হিজরী সনের দ্বিতীয় মাস সফরের শেষ বুধবারে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ বারের মতো সুস্থ হয়েছিলেন। যে কারণে এই বুধবার আখেরি চাহার শোম্বা নামে পরিচিত হয়েছে। তৃতীয় মাস রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখ প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরাধামে আবিভূর্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন। তার হিজরতের এবং রফীকুল আ‘লার কাছে ফিরে যাওয়া প্রভৃতি ঐতিহাসিক ঘটনার সমৃদ্ধ ১২ রবিউল আউয়াল পালিত হয় পবিত্র সীরাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনিভাবে রাসূলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রাতে বোরাকে চড়ে মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় গিয়েছিলেন এবং চোখের পলকে সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা ছাড়িয়ে ৭০ হাজার নূরের পর্দা ভেদ করে স্থান কাল পাত্রের ঊর্ধ্বে এক অনন্ত লা যামান লা মাকান স্তরে উন্নিত হয়েছিলেন।

সেই মুবারক রাত্রি আসে সপ্তম মাস রজবের ২৭ তারিখের রাত্রিতে শবে মিরাজ হিসাবে পালিত হয়ে থাকে। হিজরী সনের অষ্টম মাস শাবানের ১৪ দিবাগত রাত্রি অর্থাৎ ১৫ তারিখ রাত্রিকে বলা হয় শবে—বরাত যার অর্থ মুক্তির রাত। শাবানের পর আসে রমজান মাস। রমযান মাসে এক মাস সিয়াম পালন শেষে আসে ১ শাওয়াল সিয়াম ভাঙার আনন্দ উৎসব ঈদুল ফিতর।

দ্বাদশ মাসে জিলহজ্জের ৮ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ মক্কা মুয়াজ্জমায় প্রায় ১০ মাইল এলাকা জুড়ে মিনা আরাফাত, মুজদালিফা প্রভৃতি বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট সময়ে যে সব হুকুম আহকাম পালিত হয়, তাকেই হজ্জ বলে। আর এই জিলহজ্জের ১০ তারিখে মুসলিম মিল্লাতের সর্বত্র পালিত হয় ঈদুল আযহা বা কুরবানির ঈদ। একথা সর্বজন স্বীকৃত, প্রাচীনকাল থেকেই আরব দেশে চাঁদের হিসাবে মাস গণনা করা হতো। নতুন চাঁদ ও পূর্ণ চাঁদ দেখে আরবি কাজে অনেক পংক্তি সৃষ্টি হয়েছে।

ইসলাম পূর্ব আরবেও আরবি মাসের হিসাব রাখলে ও তাঁদের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে হিজরী সন পালন করা হতো না। খুলাফায়ে রাশেদীনের আমল থেকেই হিজরী সন ব্যবহারিকভাবে চালু হয়। মহান আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে যথাযথ মর্যাদায় হিজরী সন পালন করার তাওফীক দিন।

আরো জানতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইট রাহে সুন্নাত ব্লগ

যে মহিলা বে-পর্দা চলতে অভ্যস্ত তার জন্যও পর্দা আবশ্যক

বিবাহের পর কনে তুলে নেওয়ার আগে পর্দা রক্ষা করা কি জরুরী?

ডাক্তারের সামনে শরীর উন্মুক্ত করার শরয়ী বিধান কী?

রমযানুল মোবারক : অফুরন্ত কল্যাণের ভাণ্ডার

https://youtu.be/JzUwd-EUYW0

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *